বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগে ত্রি’মুখী দ্বন্দ্ব নেতা কর্মীরা দ্বিধা বিভক্ত



জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ অভ্যন্তরিন কোন্দলের কারণে নেতাকর্মীরা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে দিন দিন বকশীগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন উৎতপ্ত হয়ে উঠছে। এ কারনে নিজেদের মধ্যে একের পর এক চলছে হামলা, মামলা। চলছে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। কাকে কখন কিভাবে ঘায়েল করা যায় এই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। এই গ্র“পিং রাজনীতিতে বিব্রত্বকর অবস্থায় পড়েছেন পুলিশ,স্থানীয় সাংবাদিক ও জনসাধারণ। 
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরিন কোন্দলের সূত্রপাত ঘটে। ওই নিবাচর্নে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার ক্ষোভে আওয়ামীলীগের দলীয় সভাপতি নুর মোহাম্মদ ওই সময় আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী নিয়ে স্বতন্ত্র নিবার্চন করেন। ওই নির্বাচনে দলীয় ভাবে মনোনয়ন লাভ করেন ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত বর্তমান তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আলহাজ আবুল কালাম আজাদ। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূর মোহাম্মদ প্রায় পেয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার ভোট। বিদ্রোহী থাকার পরও বিপুল ভোট পেয়ে এ আসন থেকে নিবার্চিত হন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। এরপর থেকে বিগত প্রায় আড়াই বছর ধরে নূর মোহাম্মাদ ও তার সর্মথকরা রাজনৈতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। 
অন্যদিকে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত নুর মোহম্মদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করায় স্থানীয়ভাবে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পদ থেকে বহিস্কার করার সুপারিশ করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে জেলা আওয়ামীলীগ তার বহিস্কারদেশ নিয়ে গড়িমসি করে এই পর্যন্ত চলে আসছেন বলে দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ। সেই থেকে দ্বন্ধের সূত্রপাত বলে নেতাকর্মীদের দাবি করেন।
অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী সভাপতি নূর মোহাম্মদসহ তার সমর্থিত নেতাকর্মীদেরকে দল থেকে বহিস্কার করে সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মেডিসিনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে দায়িত্ব দেন। এই নিয়েও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের  মধ্যেও রয়েছে বিভেদ, বিভক্তি। আবার কিছু কিছুু নেতা উপরে উপরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পক্ষে কাজ করলেও নেপথ্যে সহযোগিতা করছেন বিদ্রোহী সভাপতি নুর মোহাম্মদকে। এই কারনে দলের নেতাকর্মীরা কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। অনেকের প্রশ্ন কে কার লোক ? এই নিয়েও রয়েছে নানান সংশয় !            
এ ব্যাপারে আবুল কালাম আজাদ মেডিসিন গ্র“পের নেতাকর্মীদের অভিযোগ নুর মোহাম্মদ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিবার্চন করেছেন। দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজে লিপ্ত থেকে সে এবং তার সমর্থক বর্তমানে আওয়ামীলীগের সভাপতি তো দুরের কথা, সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। অপরদিকে বিদ্রোহী সভাপতি নুর মোহাম্মদ গ্র“পের নেতাকর্মীদের দাবি জেলা ও কেন্দ্রয়ী কমিটি কর্তৃক বহিস্কারাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নূর মোহাম্মদই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তাকে জেলা ও কেন্দ্রীয় ভাবে কেউ বহিস্কার করেনি।
এ নিয়ে গত আড়াই বছর ধরে চলছে দু’গ্র“পের মধ্যে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। আওয়ামীলীগের দু’গ্র“পে ১৪৪ ধারা জারি একাধিক হামলা দ্রুত আইনে বিচার মামলাসহ একাধিক মামলা হয়েছে। এতে একদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠন ভারপ্রাপ্তদের ভারে ভারাক্রান্ত। অপরদিকে পদ পদবী ও ক্ষমতা নিয়ে চলছে দলের অভ্যন্তরে রশি টানা টানি। এই অবস্থা উপজেলার আওয়ামীলীগে হযবরল অবস্থা। তাছাড়াও আওয়ামীলীগের আরেকটি গ্র“প সিদ্ধান্তহীনতা ভোগছে। এই ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয় জানান বতর্মান সময়ে বিআর এস বা নব্য আওয়ামীলীগার ভরে গেছে। নব্য আওয়ামীলীগারদের সাথে কাজ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার দিন বদলের সনদ বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। তাই বিআর এস আওয়ামীলীগের সাথে দূরত্ব রক্ষা করে চলেছি। সাধারন নেতা কর্মীদের অভিযোগ যে ধারায় বকশীগঞ্জের আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে এর সুষ্ঠু সুরহা না হলে যে কোন মূহুুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ। দলের এই অভ্যন্তীন ত্রিমুখী কোন্দল নিরসন না হলে আওয়ামীলীগের দীর্ঘ দিনের সুপরিচিতি ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত এই আসনে ভরাডুবি হওয়ার সম্ভবনা অমূলক নয়।
সরওয়ার জামান রতন

1 comments:

Post a Comment

Share

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More