সত্যিই বিচিত্র আমাদের স্বপ্নিল মহাকাশ। কোটি কোটি তারকাপুঞ্জ, অসংখ্য ছায়াপথ, আবিষ্কৃত কিছু নক্ষত্র আর হাতেগোনা দশটি গ্রহের খবর আমরা আজ পর্যন্ত জানতে পেরেছি। কিন্তু মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ঠিকই জানেন, এই মহাকাশ অপার রহস্যের জগৎ। যে কারণে তারা নিরলস শ্রম দিচ্ছেন এই মহাকাশের রহস্য ভেদ করে অজানা গ্রহ, নক্ষত্র আবিষ্কার আর এদের গতিবিধি নজরদারি করতে। এক্ষেত্রে প্রথমেই আসে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার নামটি। তাদের গবেষণায় নিত্য-নতুন তথ্য পাচ্ছেন বিশ্বের অনুসন্ধিৎসু মানুষ। সম্প্রতি তারা মহাকাশের বেশকিছু নতুন তথ্য এবং ছবি প্রকাশ করেছেন। এরই খোঁজ-খবর জানাচ্ছেন জিয়াউল জিয়া নতুন কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান লাভ মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তারা নতুন একটি বিশাল আয়তনের কৃষ্ণগহ্বরের (ব্ল্যাকহোল) সন্ধান পেয়েছেন। নাসা বলেছে, কৃষ্ণগহ্বরটি আবিষ্কারে তারা এক্সরে ইমেজ পদ্ধতির সহযোগিতা নিয়েছেন। তাদের ধারণা, এই ব্যাকহোল বয়সে তরুণ এবং সময়ের বিবর্তনে এটি আরও বিস্তৃতি লাভ করবে। জানা গেছে, প্রায় ছয় সপ্তাহ নিরলস মহাকাশ পর্যবেক্ষণের পর এই ব্যাকহোলের দেখা পান নাসার কর্মীরা। নাসার ভাষ্য, ক্রমেই সম্প্রসারিত ব্যাকহোলটির ছায়াপথগুলো এখনও শতভাগ পরিপূর্ণ হয়নি। ৩০ শতাংশ পরিপূর্ণ বলেই মনে হয়েছে তাদের। এ সম্পর্কে ইয়ালে ইউনিভার্সিটির গবেষক কেভিন চনিস্কি বলেছেন, আমরা এ আবিষ্কারের ফলে হয়তো কৃষ্ণগহ্বরের নতুন একটি প্রজš§কেই খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছি। এ ধরনের কৃষ্ণগহ্বরের সংখ্যা মহাকাশে ১০০ বা এক হাজারেও বেশি হতে পারে।
সৌররশ্মির ঝড়
নাসার ৭ জুন তোলা ছবিতে দেখা গেছে, সূর্যের উপরিভাগে মাঝারি ধরনের তেজস্ক্রিয় সৌররশ্মির ঝড় প্রবাহিত হচ্ছে। আর সূর্যের উপরিভাগে মাশরুম আকৃতির মেঘদল। নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আজ এমন ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সৌররশ্মি ঝড়ের কারণস্বরূপ মহাকাশ বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর অভ্যন্তরের বিরূপ আবহাওয়াকেই দায়ী করেছেন। তারা বলেছেন, কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এই ঝড় সংঘটিত হয়েছে। তবে তারা এও বলেছেন, পৃথিবীর বয়স অনুযায়ী এখনই এরকম ঝড় অপ্রত্যাশিত। তাদের মতে, অবিলম্বে পৃথিবীর কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমিয়ে আনা প্রয়োজন। তা না হলে সূর্যের অভ্যন্তরে এ ধরনের ঝড় অব্যাহত থাকবে এবং তা পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্রভাব ফেলবে। কি ধরনের প্রভাব ফেলবে তারও একটি ধারণা দিয়েছেন তারা। তাদের মতে, এতে করে সূর্যের আলোর তেজ বৃদ্ধি পাবে যে কারণে পৃথিবীতে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করবে এবং মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। যে কারণে খাদ্য সংকট দেখা দেয়া ছাড়াও হিট স্ট্রোকে মানুষের মৃত্যু হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই অস্বাভাবিক তাপমাত্রার বিপরীতে বৃষ্টি হওয়ার কোন প্রকার সম্ভাবনা নেই। নাসার বিজ্ঞানীদের এমন মন্তব্যে নড়েচড়ে বসেছে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো। কারণ, শিল্প প্রধান এই দেশগুলোর শিল্প-কারখানা থেকেই এই কার্বন নিঃসরণ হয়ে থাকে। আর এর মাসুল দিতে হবে সবাইকে। তারা এখন ভাবছেন বৈজ্ঞানিক চিমনি আবিষ্কারের কথা। যার দ্বারা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা যায়। তবে দুঃখের বিষয়, এখনও এরকম চিমনি আবিষ্কারের কোন খবর জানা যায়নি।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের প্রথম ছবি প্রকাশ
মার্কিন মহাকাশ গবেষণাবিষয়ক সংস্থা নাসা মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের দুর্লভ ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিটি পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ২২০ মাইল উচ্চতায় তোলা। নাসার প্রকাশিত ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে মার্কিন মহাকাশযান এনডেভার। ছবিটি তোলা হয়েছে রুশ নভোযান সুয়োজ ঢ়েথকে, তুলেছেন সুয়োজের নভোচারী পাওলো নেসপোলি। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের কমান্ডার দিমিত্রি কন্দ্রাতিয়েভ, নাসার সেডি কোলম্যান এবং নেসপোলি ১৫৯ দিন মহাকাশ ভ্রমণ শেষে গত মাসে রাশিয়ার কাজাখস্তানে অবতরণ করেন।
তথ্য ও ছবি : ইন্টারনেট
0 comments:
Post a Comment