সবাই আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন কবে পেশ হবে বাজেট। তরুণ প্রজšে§রও কিছু চাওয়া-পাওয়া থাকে প্রতিবারের বাজেট নিয়ে। তাদের প্রত্যাশা থাকে প্রযুক্তিপণ্যের দাম কমবে বা ইন্টারনেটের দাম হাতের নাগালে আসবে বা গতি আরও বাড়বে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প অংকনকারী সরকারের বাজেটে নিশ্চয়ই আইসিটির খাতের জন্য বিশেষ কিছু থাকবে। দেশের আইসিটি অঙ্গনের সঙ্গে সংশিষ্ট ব্যক্তিরা বাজেট পেশ করার কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। আইসিটি বাজেট নিয়ে কিছু প্রস্তাবও করেছিলেন তারা। আইসিটি বাজেট কেমন হওয়া উচিত, তরুণ প্রজšে§র প্রয়োজন কী, ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নে কী করা জরুরি এসব বিষয় নিয়ে তারা বেশ চিন্তা-ভাবনা করেই প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রীর কাছে। বাজেট ঘোষিত হওয়ার পর হতাশ হতে হল সবাইকে। দেখা গেল, আইসিটি খাত চরম অবহেলিত রয়ে গেছে প্রতিবারের মতোই। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ‘ভিশন ২০২১’ ঘোষণার পর বর্তমান সরকারের এটি ছিল জাতীয় সংসদের তৃতীয় বাজেট। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে সবার প্রত্যাশা ছিল জাতীয় আইসিটি নীতিমালার ২০০৯-এর আলোকে এবারের বাজেটে সামগ্রিকভাবে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং এই বাজেটে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা, কর্মপরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকবে। জাতীয় আইসিটি নীতিমালা বাস্তবায়নের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি। বরং আইসিটি শিল্পের উন্নয়নের ব্যাপারটি বরাবরের মতো এবারও অবহেলিতই রয়ে গেছে। জাতীয় আইসিটি নীতিমালায় ৩০৬টি অ্যাকশন আইটেম ছিল বলে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় উলেখ করেছেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকশান আইটেমের মধ্যে ১৫৯ নং অনুচ্ছেদে আইসিটি শিল্প উন্নয়ন ফান্ড গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ৭০০ কোটি টাকার ১০% অর্থাৎ ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষ থেকে করা হলেও বাজেটে এ সংক্রান্ত কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। একইসঙ্গে নীতিমালার ১৫৮ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আইসিটি শিল্প উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনেরও প্রস্তাব করা হলেও বাজেটে এ ব্যাপারে কোন বাজেট বরাদ্দ নেই। উলেখ আছে হাইটেক পার্কের কথা। কিন্তু সেটারও উন্নয়ন কার্যক্রম শুরুর জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ বাজেটে নেই। বর্তমান সরকার জনতা টাওয়ারকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে যা আইসিটি শিল্পের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু এর উন্নয়নের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করা হয়নি। জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ছাড়াও ঢাকায় ৩টি এবং ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি আইটি পার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্র“তি থাকলেও বাজেটে এ বিষয়ে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মানব সম্পদ তৈরিতে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হবে বলেও আশা ছিল সংশিষ্টদের। কিন্তু এ বিষয়েও বাজেটে কোন ঘোষণা দেয়া হয়নি।
সফটওয়্যার ও আইসিটি শিল্পখাতের কর অব্যাহতি সুবিধা ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও জাতীয় আইসিটি নীতিমালায় এ সুবিধা ২০১৮ পর্যন্ত করার কথা উলেখ আছে। আইসিটি বিষয়ে বিশ্বখ্যাত গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গার্টনার বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি আউটসোর্সিং দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আইটি অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি কর অবকাশ সুবিধা জাতীয় আইসিটি নীতিমালার আলোকে ২০১৮ পর্যন্ত বৃদ্ধি ছিল সবার আশা।
ভূমি রেজিস্ট্রেশন, রেকর্ড, ট্রেড পোর্টাল ইত্যাদি অটোমেশনের কথা বাজেট বক্তৃতায় উলেখ করা হয়েছে। জাতীয় আইসিটি নীতিমালার ১০০ নং অ্যাকশান আইটেমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ই-গভর্নেন্স কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়ন বাজেটের ৫% ও রাজস্ব বাজেটের ২% অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে বাজেটে কোন সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের জন্য ৭৮টি সেবার উপর নির্দিষ্ট কোড থাকলেও সফটওয়্যার ও আইটিইএসের জন্য কোন কোড দেয়া হয়নি। যদিও বাজেট পূর্ববর্তী এ সম্পর্কিত সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের তিন প্রধান এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়েছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দেশব্যাপী ইন্টারনেট বিস্তার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ১৫% ভ্যাট বিদ্যমান, যা আইটি নীতিমালার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এছাড়া ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির অন্যতম মাধ্যম ফাইবার অপটিক ক্যাবলের ওপর শুল্ক হার বৃদ্ধি (৩% থেকে বাড়িয়ে ১২%) ইন্টারনেট সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করবে।
কম্পিউটার ও নেটওয়ার্ক সামগ্রী আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে ৩% এটিভি (অফাধহপবফ ঞৎধফব ঠঅঞ) ধার্য আছে। সংশিষ্টদের প্রস্তাব ছিল এই ৩% চূড়ান্ত ভ্যাট হিসেবে গণ্য করা হোক, খুচরা পর্যায়ে বা সরবরাহকারী পর্যায়ে আর কোন ভ্যাট আদায় যেন করা না হয়। কিন্তু বাজেটে এ বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়নি।
২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে ল্যাপটপের অন্যতম অংশ ক্যারিং ব্যাগের ওপর ২৫% কাস্টম ডিউটি, ৫% রেগুলেটরি ডিউটি, ২০% সাপিমেন্টারি ডিউটি, ১৫% ভ্যালু এডেড ট্যাক্স, ৩% এডভান্স ট্রেড ভ্যাট এবং ১% প্রি-শিপমেন্ট ইন্সেপেকশন চার্জ আরোপের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ল্যাপটপ ক্যারিং ব্যাগ ল্যাপটপের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর ফলে প্রতিটি ল্যাপটপের সঙ্গেই একটি করে ক্যারিং ব্যাগ বিনামূল্যেই পাওয়া যেত। ক্যারিং ব্যাগের ওপর প্রস্তাবিত ৭২% (সর্বমোট) কর আরোপ করা হলে ভবিষ্যতে আমরা ল্যাপটপের সঙ্গে বিনামূল্যের ক্যারিং ব্যাগটি এখন থেকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে আর ল্যাপটপের দামটিও যাচ্ছে বেড়ে। প্রস্তাবিত বাজেটে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনিটরের ক্ষেত্রে ১৯ ইঞ্চির ঊর্ধ্বে অর্থাৎ মার্কেটে প্রচলিত ১৯.৫ ইঞ্চি হতে তদূর্ধ্ব সব মনিটরের ওপর বর্ধিত হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে ক্রেতাদের চাহিদা বিশেষণ করলে দেখা যায়, ১৯.৫ ইঞ্চি হতে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের মনিটরের চাহিদা লক্ষণীয় এবং এ ধরনের মনিটর কর্মক্ষেত্রে কাজের গতি ত্বরান্বিত করে। কিন্তু ২০১০-১১ অর্থবছরে ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের মনিটরের ওপর বর্ধিত কর আরোপ হয়নি। এছাড়া, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে অচিরেই মনিটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসূমহ ছোট আকারের মনিটর তথা ১৬ ইঞ্চি থেকে ১৯ ইঞ্চি পর্যন্ত সাইজের মনিটর উৎপাদন কমিয়ে দেবে। ইদানীং সিআরটি মনিটর উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং, ১৯ ইঞ্চি ঊর্ধ্ব মনিটরের ওপর বর্ধিত কর আরোপের ফলে ক্রেতাসাধারণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক। মনিটরটিতে কেউ যদি টিভি কার্ড সংযোজন করে সেটিকে টিভি হিসেবে ব্যবহার করে তাহলে নিশ্চয়ই মনিটরটির ব্যবহার নিশ্চিত হবে। সরকার যেখানে বিদ্যুতের নিশ্চয়তা দিতে পারে না enerator/Solar System -কে প্রাধান্য দিয়ে নিুপর্যায়ে Custom duty avh© ধার্য করেছে। আর Computer ব্যবহারকারীদের জন্য ২০০০ VA ch©š— UPS Gi Custom duty আরোপ করে আমদানি নিরুৎসাহী করা হচ্ছে।
সারা বাংলাদেশের Connectivity কাজে ব্যবহারের জন্য Cat 5, Cat 6 Networking Cable Custom duty 25% I 15% VAT বলবৎ রাখা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment