আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু হলে পুলিশ তলাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে সজীব নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা দেড়টার দিকে ছাত্রলীগের শরীফুল ইসলাম শরীফ গ্র“পের কর্মীরা পলাশ ও আরিফের নেতৃত্বে সশস্ত্র মহড়া দেয়। এসময় টুকিটাকি চত্বরে নয়ন গ্র“পের কর্মীরা শরীফ গ্র“পের কর্মীদের উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক মন্তব্য করলে উভয় গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পলাশ ও আরিফের নেতৃত্বে নয়ন গ্র“ফের কর্মীদের ওপর রামদা, হকিস্টিক, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। হামলায় নয়ন গ্র“পের কর্মী আমিন, বেহেস্তি ও দেব গুরুতর আহত হয়। পরে শরীফ গ্র“পের নেতাকর্মীরা নয়ন গ্র“পের কর্মীদের ধাওয়া করলে তারা বঙ্গবন্ধু হলে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে নয়ন গ্র“পের কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে শরীফ গ্র“পের কর্মীদের পাল্টাধাওয়া করে শরীফের অন্যতম সহযোগী পলাশকে মারধর করে। এসময় পুলিশি অ্যাকশনে উভয় গ্র“পের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। বিকালে পলাশ ও আরিফের নেতৃত্বে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র নিয়ে আবারও সশস্ত্র মহড়া দেয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতি এ মহড়ায় পুরো ক্যাম্পাসে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মহড়া শেষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের দিকে শরীফের কর্মীরা অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশও মারমুখী অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশের হামলায় সজীব ও মেহেদী নামের অপর দুই ছাত্রলীগকর্মী আহত হয়। পরে আহত সজীবকে পুলিশ আটক করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন কক্ষে পুলিশি তলাশি চালিয়ে ২৫টি রামদা, ১৩টি কিরিচ, ১৩টি হাসুয়া, ১০টি লোহার রড, ১৫টি স্টিলের পাইপ, ৩টি চাইনিজ কুড়াল, ৬টি হাঁতুড়ি, ২টি ক্ষুর, ৩টি অত্যাধুনিক চাকু, ৬টি হকিস্টিক, ৩টি সাইকেলের চেন, এক বস্তা ভাঙা পাথর এবং ২০টি খালি মদের বোতল উদ্ধার করে। পরে কক্ষগুলো প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিলগালা করে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, উভয় গ্র“পের কর্মীরাই সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হতে পারে।
শরীফ গ্র“পের কর্মী আরিফ বলেন, নয়ন ও তার সহযোগীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। যে কোন মূল্যে ক্যাম্পাসে এই সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করা হবে। অপরদিকে নয়ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, যেসব কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো শরীফের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকবর হোসেন বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ক্যাম্পাসকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
0 comments:
Post a Comment