কালো ভালুক




এশীয় কালো ভালুককে জাম্বুবান বলা হয়। আবার কেউবা বলেন, এশিয়াটিক ব্যাক বিয়ার। আবার এদের বুকের সাদা বা হলদে সাদা দাগটার জন্য অনেক সময় এদের মুন বিয়ার নামেও ডাকা হয়। পশ্চিমে ইরান থেকে পূর্বে জাপান আর উত্তরে চীন থেকে দক্ষিণে মালয়েশিয়া পর্যন্ত এশীয় কালো ভালুকের দেখা মেলে। পোকামাকড়, ঘাস, ফল, পাতা, কচি বাঁশ, বাদাম, মধু, বিভিন্ন লতাজাতীয় গাছের পাতা এমনকি মৃত জীবজন্তু খায় এরা। সম্ভবত এ দীর্ঘ খাদ্য তালিকার জন্যই কালো ভালুকরা রুক্ষ পার্বত্য অঞ্চল বা আর্দ্র বনভূমিÑ সব রকম পরিবেশই মানিয়ে নিতে পেরেছে। খাবার খুঁজে বের করা, বিশ্রাম, আÍরক্ষা এবং ঘুমানোর জন্য এদের জীবনের একটা বড় অংশ গাছেই কেটে যায়। সম্ভবত এরাই একমাত্র ভালুক প্রজাতি যারা গাছের ওপর ডালপালা দিয়ে বাসা বানায় নিরাপদে ঘুমানোর জন্য। অবশ্য অনেক সময় এরা গুহাতে গিয়েও ঘুমায়। বিজ্ঞানীদের মতে, এদের আবির্ভাবের পর থেকে শারীরিক বিবর্তন প্রায় কিছুই হয়নি এবং সম্ভবত এরাই বর্তমান ভালুকদের পূর্বপুরুষ। অন্য নিকটাÍীয়দের তুলনায় এরা দু’পায়ে চলাফেরায় অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ। এরা সাধারণত একা থাকলেও মাঝে মধ্যে পরিবারের সঙ্গে থাকে। একটি পরিবারের বাবা মা ও দুটি বা তিনটি বাচ্চা দেখা যায়। চীনা ওষুধ তৈরিতে এবং খাদ্যে এই ভালুকদের বিভিন্ন দেহাংশ ব্যবহার হয়। এছাড়া এদের মাথা, থাবা এবং চামড়া স্মারক হিসেবে যথেষ্ট চাহিদাও আছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কিছু অঞ্চলে কুকুরের সঙ্গে লড়াই করার জন্যও এদের ব্যবহার প্রচলিত আছে বহু বছর ধরে। একেকটি ভালুকের ওজন ১০০ থেকে ২০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের মাথা ১৩০ থেকে ১৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। অরণ্যভূমি কমে যাওয়ার কারণে ক্রমশ কালো ভালুকের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।

0 comments:

Post a Comment

Share

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More